Online Earning With Facebook: বর্তমানে আপনার আমার সকলের প্রিয় ফেসবুক খুলে দিয়েছে এক নতুন দিগন্ত। যে দিগন্ত অনুযায়ী প্রত্যেকেরই থাকছে উপার্জন করার সুযোগ। কোন কোন উপায়ে উপার্জন করবেন সেই নিয়ে অনেকেই পথ খুঁজে পান না। সঠিক তথ্যের অভাবে দুষ্কর হয়ে ওঠে পথ খুঁজে বার করা।
আজকে আমাদের প্রতিবেদনে রইল সম্পূর্ণ বিস্তারিত। এই প্রতিবেদনটি খুব ভালো করে পড়লে আপনি বুঝতে পারবেন ফেসবুকে কোন কোন উপায়ে আপনি টাকা উপার্জন করতে পারবেন। কীভাবে শুরু করবেন আপনার টাকা উপার্জনের জার্নি ফেসবুকের সঙ্গে! টাকা উপার্জনের জন্য ফেসবুক থেকে কি কি শর্তাবলী দেয়া হয়েছে! কেমন ভাবে কাজ করে অ্যালগারিদম?
সবার প্রথমে দেখে নেওয়া যাক ফেসবুক থেকে মোট কয়টি উপায়ে আপনি টাকা উপার্জন করতে পারবেন?
ফেসবুকের পলিসি অনুযায়ী এখানে আপনি মোট ছ’টি উপায়ে ফেসবুক থেকে খুব সহজেই টাকা উপার্জন করতে পারবেন। এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন পদ্ধতি।
ছয়টি উপায় কী কী?
এবার আসা যাক কোন কোন ছটি উপায়ে আপনি খুব সহজেই ফেসবুকের কাছ থেকে টাকা উপার্জন করতে পারবেন!
Create Videos With In-Stream Ads
এটি সাধারণত খুব পরিচিত একটি ফিচার। আপনি নিজের ইচ্ছামত ফেসবুকে সচরাচর ভিডিও আপলোড করে থাকেন। কিন্তু আপনি কি জানেন এই ভিডিও যদি একটু মন দিয়ে এবং একটু রিসার্চ করে আপলোড করেন তাহলে আপনার কাছে খুলে যাবে উপার্জন করার নতুন রাস্তা। ফেসবুকের অ্যালগরিদম বলছে, যেকোন ভিডিও যদি অনেকটা বেশি মানুষের কাছে পৌঁছায় তাহলে সেখানে সম্ভাবনা থাকে অ্যাড আসার। যে অ্যাড ফান্ডিং জোগাড় করতে সাহায্য করে। এই অ্যাডভার্টাইজমেন্ট এর ফলে যেমন ফেসবুক উপকৃত হয় ঠিক তেমনি তার পাশাপাশি উপকৃত হন কনটেন্ট ক্রিয়েটাররাও।
ইন স্ট্রিম বিজ্ঞাপন কার্যকর: ধরুন আপনি কোনও বোতলের ব্যবসা করেন বা পরিষেবা দেন। সেক্ষেত্রে আপনি আপনার বোতলের কোয়ালিটি, বোতলের ডিওটাবিলিটি সবকিছুর ওপরেই ভিডিও বানালেন। তার ওপর ছোটখাটো কোনও ক্যাম্পেন রান করালেন। এরপরই আপনার পরিষেবা পৌঁছে গেল লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে। এক্ষেত্রে আপনি উপকৃত হলেন দুইভাবে।
প্রথমত আপনি উপকৃত হচ্ছেন অনলাইনে অ্যাড ক্রিয়েশনের মাধ্যমে, দ্বিতীয়ত আপনার পরিষেবা যেহেতু অনেক বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে তাই আপনার বিক্রিও বেড়ে যাওয়া সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। গড়ে উঠছে একটি ইতিবাচক এবং সৃজনশীল দৃষ্টিভঙ্গি।
আপনারা হয়তো লক্ষ্য করেছেন যেই সব ভিডিওর রিচ অনেকটা বেশি থাকে সেই সব ভিডিও শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চলে আসে নির্দিষ্ট কিছু অ্যাডভারটাইজমেন্ট। কিংবা অনেক সময় আবার দেখা যায় ভিডিও চলতে চলতেই শুরু হয়ে গেল অ্যাডভার্টাইজমেন্ট। যেসব ভিডিও চলতে চলতে আপনি অ্যাডভার্টাইজমেন্ট দেখতে পান সেই সব ভিডিওর কনটেন্ট ক্রিয়েটাররা উপার্জন করেন।
Add a Paid Subscription To Your Page
ফেসবুকের অন্যতম নতুন একটি ফিচারস হল এই অপশনটি। যারা যারা আপনার নিজস্ব অ্যাড অর্থাৎ যারা আপনার কনটেন্ট খুব বেশি পরিমাণে ভালোবাসে তারা এই ফিচারটি কাজে লাগাতে পারেন। এই ফিচারস অনুযায়ী অডিয়েন্সের থেকে ন্যূনতম কিছু টাকা নেওয়া হয় এবং তাদেরকে সবার প্রথম আপনার আপলোড করা কনটেন্ট দেখানো হয়। এক্ষেত্রে যেমন সুবিধা ভোগ করেন তারাও ঠিক তেমনি উপার্জনের নতুন রাস্তা খুলে যায় আপনারও।
অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় বড় বড় সক্রিয় পেজগুলিতে নিজেদের অডিয়েন্সকে উৎসাহিত করতে বিভিন্ন নগদ পুরস্কারের কিংবা ডিসকাউন্ট এর ঘোষণা করার। এক্ষেত্রে যদি অডিয়েন্স পুরষ্কার পান তাহলে তারা আরো বেশি পরিমাণে এই সমস্ত দিকে ঝোঁকার উৎসাহ দেখান। মনে রাখবেন দেওয়া নেওয়াতেই আমাদের সমস্ত সম্পর্ক টিকে থাকে। শুধুমাত্র আমি উপার্জন করবো এমন ভাবলেই হবে না, আপনাকেও ন্যূনতম কিন্তু কিছু ইনভেস্ট করতে হবে। আপনি কিছু দেবেন অডিয়েন্স আপনাকে তার বেশি পরিমাণে রিটার্ন দেবে।
Collaborate With Brands
এই অপশনটি মূলত বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সঙ্গে সহযোগিতা করে আপনি উপার্জনের নতুন রাস্তা তৈরি করে নিতে পারেন। আপনার নাগালে যে সমস্ত ব্র্যান্ড ঘোরাঘুরি করছে তাদের সঙ্গে কথা বলুন, কথা বলে একটি নতুন ডিল ফাইনাল করুন। তাদেরকে বলুন যে আপনি তাদের বিজনেস প্রমোট করতে চান। এভাবে তৈরি করুন নিজের জায়গা। প্রথমে হয়তো বিনামূল্যেই কিছু সাহায্য করতে হতে পারে আপনাকে। কারণ আপনার পেজে যদি ভালো রিচ না থাকে সে ক্ষেত্রে কোনও ব্যান্ড প্রথমে টাকা ইনভেস্ট করতে চাইবে না। পরে যদি আপনি তাদের খুব বেশি পরিবারে অডিয়েন্স এনে দিতে পারেন তাহলে ডেফিনেটলি ভবিষ্যতে ব্যান্ডের থেকে আপনি যথেষ্ট পরিমাণে লাভ করতে শুরু করবেন।
বর্তমানে এরকম প্রচুর ব্র্যান্ড রয়েছে যারা কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের মূল অস্ত্র বা হাতিয়ার বানিয়ে নিয়েছে। কনটেন্ট ক্রিয়েটারদের অডিয়েন্সকে কাজে লাগিয়ে নিজের বিজনেস প্রমোশন করে থাকে তারা। এই অপশন শুধুমাত্র ফেসবুকে নয় ইনস্টাগ্রামেও প্রযোজ্য রয়েছে। এক্ষেত্রে দেখা যায় সাধারণত আপনাকে হয়তো একটি ভিডিও বানাতে হতে পারে, তারপর সেই ভিডিওতেই সেই ব্র্যান্ড কী কী পণ্য বিক্রি করে এবং তাদের পণ্যের মধ্যে বিশেষত্ব কি সেই সব আপনাকে বোঝাতে হতে পারে আপনার অডিয়েন্সকে। ব্যস এইটুকুই। তারপর আপলোড করে দিন আপনার নির্দিষ্ট পেজ কিংবা প্রোফাইলে। যদি রিচ ভালো থাকে তাহলে প্রথম ভিডিও থেকেই আপনি উপার্জন করতে পারবেন নূন্যতম ১০ হাজার টাকা।
Earn Money Directly From Your Fans
ভক্তদের কাছ থেকেও রয়েছে, সরাসরি উপার্জন করার রাস্তা। এক্ষেত্রে ফেসবুক আপনার সামনে খুলে দিয়েছে তার নামক একটি অপশন। যদিও আগে এটি ষ্টার অপশন থাকলেও এখন আপনার স্ক্রিনে ‘সাপোর্ট’ বলে একটি অপশন দেখতে পাবেন।
অনেক ক্ষেত্রে ফেসবুকও বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসে। চ্যালেঞ্জগুলো আপনি যদি সম্পূর্ণ করেন তাহলে সেখান থেকে আপনি উপার্জন করতে পারবেন কিছু পরিমাণে টাকা। দিন বাদলের সঙ্গে সঙ্গে facebook নিত্যনতুন অপশনের সঙ্গে প্রত্যেকেরই পরিচয় ঘটিয়ে দিচ্ছে। সুতরাং এখন থেকেই ফেসবুকের পিছনে কিছু পরিমাণে সময় দিন পরবর্তীকালে এখান থেকেই রিটার্ন পাবেন অনেকটা।
Run Paid Events Online
এক্ষেত্রে আপনি একটি লাইভ ইভেন্টের মাধ্যমে আপনার অনুগামী বা সদস্যদের যুক্ত করতে পারেন। যেখানে আপনি কিছু কনটেন্ট দেখাবেন এবং তারা নিজের বাড়িতে আরাম করে বসে উপভোগ করবেন। ফেসবুক এই ইভেন্টগুলি কে টাকা আদান প্রদানের মাধ্যমে ব্যবহারের সুযোগ করে দেন সবাইকে। নির্দিষ্ট সময় সেটআপ করা যায় এখানে।
Drive Visitors To Your Online Store
এরপর আপনি একটি খুলে নিতে পারেন কোনও অনলাইন স্টোর। সেই অনলাইন স্টোরকেই ফেসবুক পেজ কিংবা ফেসবুক প্রোফাইলের মাধ্যমে প্রমোশন শুরু করুন। এরপর সেখান থেকেই পেয়ে যাবেন বড় পরিমাণে গ্রাহক। গ্রাহকদের সঙ্গে কথাবার্তা বলে আপনি খুব সহজেই নিজের ব্যবসা বাড়াতে পারবেন।
এরপর আসা যাক আপনি, কিভাবে একজন সফল ক্রিয়েটর হবেন?
শুধুমাত্র পথ জানলেই হবে না, এই পথে চলার জন্য রয়েছে বিভিন্ন কিছু নিয়ম কানুন। যে নিয়ম-কানুন গুলো ঠিক করে দেওয়া হয়েছে ফেসবুক বা মেটা কোম্পানির তরফ থেকে। এই নিয়ম কানুন গুলো না জানলে আপনি যতই পোস্ট করুন না কেন আপনার পণ্য বা কনটেন্ট মানুষের কাছে পৌঁছাবে না।
প্রথমেই দেখতে হবে ফেসবুকের কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড। এটি হল একটি মৌলিক কিছু নিয়ম। এই নিয়ম অনুযায়ী আপনাকে ফেসবুক বলে দেয় আপনি কেমন গ্রাফিক্স ব্যবহার করতে পারবেন, আপনি কেমন কন্টেন্ট ব্যবহার করতে পারবেন, কোন কনটেন্ট দিলে ফেসবুক তা সরিয়ে দিতে পারে! সবকিছুই উল্লেখ থাকবে এখানে। তাই যে কোনআ কিছুর শুরু করার আগে খুব ভালো করে কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড পড়ে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
এরপরে লক্ষ্য রাখুন পার্টনার মনিটাইজেশন পলিসি ওপর। এই পলিসি অনুযায়ী আপনি আদৌ ফেসবুকের সঙ্গে উপার্জন করতে সক্ষম কিনা সেই ব্যাপারে বুঝতে পারবেন। ফেসবুকের বেশ কিছু মনিটাইজেশন টুলস রয়েছে। সেগুলো আপনার পেজ কিংবা আপনার প্রোফাইলে একটিভ রয়েছে কিনা তা যাচাই করে নিতে পারবেন এই অপশন থেকেই। যাচাই করার জন্য আপনি প্রফেশনাল ড্যাশবোর্ডে চলে যান। সেখানেই রয়েছে মনিটাইজেশন অপশন। এখানে ক্লিক করলে আপনার পেজ বা প্রোফাইলটি উপার্জন করতে সক্ষম কিনা তা দেখিয়ে দেবে।
কনটেন্ট মলিটাইজেশন পলিসি, অর্থাৎ আপনি যে কনটেন্টগুলো ফেসবুকে আপলোড করছেন সেগুলোর পিছনেও রয়েছে কিছু পলিসি। কনটেন্ট শুধুমাত্র বানালে হবে না আগে ফেসবুকের গাইডলাইন পড়ে জানতে হবে মনিটাইজেশন পাওয়ার জন্য তারা কি কি পলিসি রেখেছে। সবটা বিশদে জেনে তবে কনটেন্ট আপলোড করা শুরু করুন। নয়তো দেখবেন আপনি সমস্ত ক্রাইটেরিয়া ফুলফিল করে ফেলেছেন তবুও আপনি পাচ্ছেন না মনিটাইজেশন।